দিদার পুকুর
আমার দিদার একটা পুকুর ছিল। সেই পুকুরের পাড়ে বছরের বিভিন্ন সময়ে এসে বসতেন কখনও চাপড়া ষষ্ঠী, ইতু ঠাকুর, মা অন্নপূর্ণা তাঁর ঈশ্বরী পাটনিকে নিয়ে, নন্দী ভৃঙ্গি সহ শিব ঠাকুর আরও কত কত দেব দেবী তাঁদের আচার উপাচার পার্বণ নিয়ে। শুধু বছরে একবারই আসতেন কৃষ্ণ দূরে কলা গাছের ঝোপে পায়ে তীর লাগা বিষাক্ত শরীরে চুপ করে শুয়ে থাকতেন। গান্ধারীর শাপে আজ তাঁর যদু বংশে কেউ নেই। দিদা ডুব দিয়ে আঁজলা ভরা জল নিয়ে তাঁকে দিতেন। অদূরে কাঁচা মিঠে আম গাছের নীচে শর সজ্জায় শুয়ে আছেন পিতামহ ভীষ্ম। দুকূলে এতো এতো বংশের বাতি জ্বালা লোক থাকলেও তাকে জল দেবার লোক কই? আবার একটা ডুব। আঁজলা ভরা জল। পুরোহিত নেই, তিল নেই, যব নেই, কুশের আংটি নেই তাতে কি? জলে ভরা টলটলে চোখের মতো চেয়ে থাকা একটা পুকুর আছে না। দিদা ডুব দেয়। সপ্ত ঋষি জল পান। বাঁশ গাছের ঝোপে দাঁড়ানো যম জল নেন। তারপর কুরুক্ষেত্রের ওই রাশি রাশি সৈনিক যারা শিউলি গাছের ফুল হয়ে ছড়িয়ে আছে উঠোনে তাঁরা জল পান। সব শেষে বাড়ির লোক। যারা একদিন গাযে গা লাগিয়ে ছিল। যারা একদিন ছায়া ছায়া হয়ে সরে গেল সব্বাই আঁজলা ভরা জল পায়। আর তার পাশে দাঁড়ানো নাতি যে এই বিরাট আখ্যানের অংশীদার হয়ে ডুব