তিতুন ও টারজান
লীলা মজুমদারের জ্যাঠামশাই উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ময়মনসিংহের বাড়িতে দুটো হাতি ছিল। একটার নাম যাত্রামঙ্গল আরেকটার নাম কুসুমকলি। যাত্রামঙ্গল মেজাজে ছিল খুব রাশভারি। রাগিও। পান থেকে চুন খসলে তার মেজাজ যেত সপ্তমে চড়ে। নোংরা জিনিস সে মোটেই দেখতে পারতো না, এমনকি পছন্দও করতো না। সবাই যাত্রামঙ্গলকে একটু সমঝে চলতো। কুসুমকলি ছিল ঠিক তার উলটো। মেজাজেও যেমন শান্ত। তার মুখটাও ছিল খুব মিষ্টি। চোখ দিয়ে মিটিমিটি হাসতো আর মাথার ওপর শুঁড় তুলে প্রনাম করতো। কমলালেবু পেলে খুশি হতো সে। এগুলো সব তিতুন পড়েছিল বইতে। সেই থেকে তার হাতি দেখার খুব শখ। শীতকালে যখন সিঁথির মাঠে সার্কাস এসেছিল তখন দূরে গ্যালারি থেকে সে হাতির ফুটবল খেলা দেখেছিল। কিন্তু বাবা বলেছিল, এগুলো ভালো নয়। পৃথিবীর আদিমতম প্রানীদের এইভাবে আটকে রেখে, জোর করে ট্রেনিং দিয়ে খেলা শেখালে পৃথিবীর ভালো হয় না। বরং ঢেড় ক্ষতি হয়। ঠিক কি যে ক্ষতি হয় সেটা সেদিন তিতুন বুঝতে পারেনি। আগেকার দিনের রাজা মহারাজারা তো হাতি পুষতো। যুদ্ধের জন্য ট্রেনিং দেওয়া হতো হাতিকে। তাহলে এখন সার্কাসে দেখালে ক্ষতি কী? বাবা বলেছিল সেগুলোও যে খুব ভালো ছিল তা কিন্তু মোটেই নয়। ...