স্থানীয় সংবাদ

স্থানীয় সংবাদ
মৌসুমী বায়ু শহরের ঋতু পরিবর্তন করে।
সত্যি কি তাই?
নাকি সেটা নিছকই ভূগোলের ব্যাপার।
কোথাও কি সেখানে সঙ্গোপনে  কোনো বোধ কাজ করে?
ব্যাপারটা ভেবে দেখা দরকার, ব্যাপারটা ভাবেন অতীনের দীপঙ্করদা।
তিনি শব্দ নিয়ে ভাবেন, যুক্তি নিয়ে ভাবেন, পালটে যাওয়া শহুরে  মানুষের বোধ নিয়ে ভাবেন।
আস্তে আস্তে শহরটা পাল্টাতে থাকে। পাল্টাতে থাকে কবেকার সেই উদ্বাস্তু কলোনী গুলো।
যে পাঁচজন পাড়ার মাচাতে বসে আড্ডা মারে,  কোথাও  যেন  তাদের সেই “দিনে কাজ নেই ” এর  প্রেমহীন জীবনে রবীন্দ্রনাথ বসন্ত আনেন। স্টেটসম্যান জোগায় “বিজারে”(পড়ুন বাজারে)ম্যাছাকার এর ঘটনা।
অনন্যার বিনুনী ভর সন্ধ্যের বাজারে চুরী যায়।
অতীন তার কবিতার খাতা ভর্তি করে ফেলে, কোথায় বিশেষণ বসবে আর কোথায় না দীপঙ্করের একটা স্পষ্ট মতবাদ থাকে।  অতীন আমল দেয় না। যৌনতা তার কাছে কিছুটা অলীক কিম্বা মেয়েদের গ্রীবা। ব্যস আর কিছু নয়।
জন্মদিনে অনন্যাকে কার্ড দেওয়া হয় না অতীনের। সে সারাদিন খুঁজে চলে তার প্রেমকে। এক সামগ্রিক ভয় তাকে গ্রাস করে।
 কলোনীর মানুষেরা পল এন্ড পলের কাছে হার মানে।
আকাশ ছুঁয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি গজায়। পুরোনো বাড়ি ভাঙা পড়ে। দেশ ছাড়া মানুষ গুলো আবার ঘর ছাড়া হয়।
রাতের আঁধারে চোর দুটো তাদের অত্যন্ত দামী ‘মালটা’ কাউকে হ্যান্ডওভার করতে পারে না।
বাংলা হীন মাতৃভাষায় ঘুরে বেড়ায় তারা। ভোর রাতে শীতের নরম নীলাভ কুয়াশায় পল এন্ড পলের সামনে বেড়িয়ে আসে কবিতা নিচয়, অক্ষয় বড়াল, কুমিল্লা বিক্রমপুরের গল্প।
হরপ্রসাদের মতো ঘুরে বেড়ায় না পার্কস্ট্রিটের পাড়ায় দীপঙ্কর- অতীন।
তারা সারা রাত অনন্যাকে খুঁজে চলে।
অতীনের বাড়ি ভাঙা পড়ে। অতীনের বাড়ির লোক, অতীনের পাড়ার লোক আবার বেঘর হয়।
ভাঙা স্তুপের মধ্যে এক উদ্বাস্তু পরিবারের উত্তরসূরী অতীন খুঁজে পায় বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়।
এই শহর এই সময় ঠিক এই ভাবেই ধরা পড়ে মৈনাক বিশ্বাস আর অর্জুন গৌরিসারিয়ার স্থানীয় সংবাদে।
এটা কোনো আলোচনা বা সমালোচনা নয়....এটা ভালোলাগা সেই ভাষার জন্যে যে ভাষায় বাংলা ছবি কথা বলতে ভুলে গেছে।
যে ভাষা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন মৈনাক আর অর্জুন।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় লেখা গুলি