বৃক্ষরোপণ উতসব
আমার ঘরের আশেপাশে যেসব আমার বোবা বন্ধু আলোর প্রেমে মত্ত হয়ে আকাশের দিকে হাত বাড়িয়ে আছে তাদের ডাক আমার মনের মধ্যে পৌঁছল। তাদের ভাষা হচ্ছে জীব জগতের আদিভাষা, তার ইশারা গিয়ে পৌঁছোয় প্রাণের প্রথম স্তরে; হাজার বতসরের ভুলে যাওয়া ইতিহাসকে নাড়া দেয়; মনের মধ্যে যে সাড়া ওঠে সেও এই গাছের ভাষায়, তার কোনো স্পষ্ট মানে নেই, অথচ তার মধ্যে বহু যুগযুগান্তর গুনগুনিয়ে ওঠে। ওই গাছগুলো বিশ্ব বাউলের একতারা, ওদের মজ্জায় মজ্জায় সরল সুরের কাঁপন, ওদের ডালে ডালে পাতায় পাতায় একতালা ছন্দের নাচন। যদি নিস্তব্ধ হয়ে প্রাণ দিয়ে শুনি তাহলে অন্তরের মধ্যে মুক্তির বানী এসে লাগে। ...
আয় আমাদের অঙ্গনে,
অতিথি বালক তরুদল,
মানবের স্নেহসঙ্গ নে,
চল্, আমাদের ঘরে চল্।
শ্যামবঙ্কিম ভঙ্গীতে
চঞ্চল কলসংগীতে
দ্বারে নিয়ে আয় শাখায় শাখায়
প্রাণ-আনন্দ কোলাহল।
তোদের নবীন পল্লবে
নাচুক আলোক সবিতার,
দে পবনে বনবল্লভে
মর্মর গীত উপহার।
আজি শ্রাবণের বর্ষণে
আশীর্বাদের স্পর্শ নে,
পড়ুক মাথায় পাতায় পাতায়
অমরাবতীর ধারাজল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন