উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা
উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা
২০০৭ সালের মার্চ্চ থেকে এপ্রিল প্রায় এক মাস আমরা উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত প্রায় ২৫ টি বনবস্তিতে ঘুরেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো প্রত্যন্ত গ্রাম গুলিকে দেখা, সেখানকার মানুষ ও কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলা। বহুমুখী কর্মসূচী রূপায়ণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সাহায্য করতে আমাদের এই Pre-Policy Documentation।
বনবিভাগের অধীনে পাঁচটি বনাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামকে আমরা বেছে নিয়েছিলাম। গ্রামগুলিকে বেছে নেওয়ার পিছনে আমাদের প্রধান যুক্তি ছিলো এই গুলি সংশ্লিষ্ট বনাঞ্চলের যেমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত তেমনই দৈনন্দিন জীবন যাপনের বেশ কিছু পরিষেবা থেকে এরা বঞ্চিত। বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত জঙ্গলে ঘেরা গ্রাম গুলিকে আমরা যেমন দেখে নিতে চাইছিলাম তেমনই আমাদের আলাপ আলোচনা, কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছিলো প্রাত্যহিক জীবনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও তথ্য।
এইসব মানুষদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের ওপর নির্ভর করে উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা নামক মূল ছবিটিকে আমরা চারটি পর্বে ভাগ করেছিলাম।
প্রথম ভাগ- শিক্ষা (সময়সীমা-৫০ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড)
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বনবস্তিগুলিতে সাক্ষরতার হার কেমন? সেখানকার ছেলেমেয়ারা কি স্কুলে যায়? কী তাদের অসুবিধা? শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির সুযোগ-সুবিধা কেমন? আদৌ কি তাদের কাছে পৌঁছোয় মিড-ডে মিল? প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে ৭/৮ কিলোমিটার দূরের স্কুলে কজন পড়তে যায়? যেখানে সমস্ত পথটাই হাঁটাপথ।
স্কুল-ছুট ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কেমন? তাদের বাবা মায়েরাই বা কি ভাবছেন? সরকারী পরিষেবা কতটুকু পৌঁছোয়? এরকম অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক, সরকারী আধিকারিকরা। বলেছেন তাঁদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার কথা।
দ্বিতীয় ভাগ-স্বাস্থ্য (সময়সীমা- ৩৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড)
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রাম থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছোতে গাড়িতে সময় লাগে ২ ঘন্টা। গাড়ি ভাড়া করতে হয়। এছাড়াও আছে পাহাড়ী চড়াই-উতরাই পথ। রোগীকে বাঁশের মাচায় বেঁধে নিয়ে যেতে হয়। এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরাই বছরে দু বারের বেশি পৌঁছোতে পারেন না। সেক্ষেত্রে গ্রামের মানুষরা কী করেন? বাচ্চাদের পোলিও খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা কী? ম্যালেরিয়ার মোকাবিলা কেমন চলছে? এইডস সম্বন্ধে এখানকার মানুষের ধারণাটা ঠিক কি? সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধকারিকরা কি বলছেন? সাধারণ মানুষদের বক্তব্য কি...সব ধরা পড়েছে আমাদের ক্যামেরায়।
তৃতীয় ভাগ-কর্মসংস্থান (সময়সীমা-৪১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড)
বেশিরভাগ সময়টাই নির্ভর করতে হয় জঙ্গলের কাঠের ওপরে। নিজেরাই স্বীকার করেন বাধ্য হয়ে চুরী করতে হয় তাঁদের। সংরক্ষিত বনভূমি হয়ে যাওয়ার পর অবস্থা আরও খারাপের দিকে। দীর্ঘদিন লোকগুলোর কাজ নেই। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প এখোনো অনেক গ্রামে পৌঁছোয়নি। ক্ষেতের ফসলে সারা বছর চলে না। যেটুকু ফসল হয় তাও যায় হাতির পেটে। আজ অনেকেই তাই ঘর ছাড়া গ্রাম ছাড়া। যাঁরা আছেন তাদের দুর্দশা ক্যামেরা বন্দী করলাম আমরা।
চতুর্থভাগ-পরিকাঠামো (সময়সীমা-৭৪ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড)
জঙ্গলের মধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত গ্রামগুলির রাস্তা-ঘাট, পানীয় জল, বাড়ি ঘরের পরিস্থিতি কেমন? এফ ডি এ ফান্ডের টাকায় গ্রামগুলিতে কেমন কাজ হয়েছে? না কি আদৌ হয় নি? আমরা এই বনবস্তি পরিক্রমায় সবচেয়ে দূরের যে গ্রামটায় যেতে পেরেছিলাম তার নাম আদমা। বক্সা বনাঞ্চলের অন্তর্গত। গাড়ি থেকে নেমে আরো চার-পাঁচ ঘন্টার হাঁটা পথ। ডুকপাদের গ্রাম আদমা। কেমন আছেন এখানকার মানুষরা? একসময় বনদপ্তর নিজেদের প্রয়োজনে যে বসতিগুলো স্থাপন করেছিলো আজ তাদের অবস্থা কেমন? ভোটাধিকার পাওয়ার পরেও কি তাঁরা তাঁদের দাবী-দাওয়া গুলো প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন?
এই চার পর্বের উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ তথ্যচিত্র। এই প্রথম উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বনবস্তি গুলির অবস্থা চিত্রায়িত হল। এই প্রথম রাভা, ডুকপা, নেপালী, ওরাঁও বিভিন্ন জনজাতির মানুষরা বললেন তাদের সমস্যার কথা একসাথে বনবস্তি কথাতে।
প্রযোজনা
রূপকলা কেন্দ্র
পরিকল্পনা ও রূপায়ণ
কল্লোল লাহিড়ী
পরিচালনা
রৌম্য রায়
কল্লোল লাহিড়ী
চিত্রগ্রহণ
অমিত মজুমদার
অতিরিক্ত চিত্রগ্রহণ
কল্লোল লাহিড়ী
সম্পাদনা
রুদ্র দাশগুপ্ত
বিশেষ সহায়তা
নেসপন
নেচার বিয়ন্ড
এই তথ্যচিত্র গুলি সপ্তম আন্তর্জাতিক সমাজ সংযোগ চলচ্চিত্র উতসব, ২০০৮, নন্দনে প্রদর্শিত হয়েছিলো।
২০০৭ সালের মার্চ্চ থেকে এপ্রিল প্রায় এক মাস আমরা উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত প্রায় ২৫ টি বনবস্তিতে ঘুরেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো প্রত্যন্ত গ্রাম গুলিকে দেখা, সেখানকার মানুষ ও কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলা। বহুমুখী কর্মসূচী রূপায়ণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সাহায্য করতে আমাদের এই Pre-Policy Documentation।
বনবিভাগের অধীনে পাঁচটি বনাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামকে আমরা বেছে নিয়েছিলাম। গ্রামগুলিকে বেছে নেওয়ার পিছনে আমাদের প্রধান যুক্তি ছিলো এই গুলি সংশ্লিষ্ট বনাঞ্চলের যেমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত তেমনই দৈনন্দিন জীবন যাপনের বেশ কিছু পরিষেবা থেকে এরা বঞ্চিত। বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত জঙ্গলে ঘেরা গ্রাম গুলিকে আমরা যেমন দেখে নিতে চাইছিলাম তেমনই আমাদের আলাপ আলোচনা, কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছিলো প্রাত্যহিক জীবনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও তথ্য।
এইসব মানুষদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের ওপর নির্ভর করে উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা নামক মূল ছবিটিকে আমরা চারটি পর্বে ভাগ করেছিলাম।
প্রথম ভাগ- শিক্ষা (সময়সীমা-৫০ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড)
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বনবস্তিগুলিতে সাক্ষরতার হার কেমন? সেখানকার ছেলেমেয়ারা কি স্কুলে যায়? কী তাদের অসুবিধা? শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির সুযোগ-সুবিধা কেমন? আদৌ কি তাদের কাছে পৌঁছোয় মিড-ডে মিল? প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে ৭/৮ কিলোমিটার দূরের স্কুলে কজন পড়তে যায়? যেখানে সমস্ত পথটাই হাঁটাপথ।
স্কুল-ছুট ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কেমন? তাদের বাবা মায়েরাই বা কি ভাবছেন? সরকারী পরিষেবা কতটুকু পৌঁছোয়? এরকম অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক, সরকারী আধিকারিকরা। বলেছেন তাঁদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার কথা।
দ্বিতীয় ভাগ-স্বাস্থ্য (সময়সীমা- ৩৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড)
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রাম থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছোতে গাড়িতে সময় লাগে ২ ঘন্টা। গাড়ি ভাড়া করতে হয়। এছাড়াও আছে পাহাড়ী চড়াই-উতরাই পথ। রোগীকে বাঁশের মাচায় বেঁধে নিয়ে যেতে হয়। এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরাই বছরে দু বারের বেশি পৌঁছোতে পারেন না। সেক্ষেত্রে গ্রামের মানুষরা কী করেন? বাচ্চাদের পোলিও খাওয়ানোর অভিজ্ঞতা কী? ম্যালেরিয়ার মোকাবিলা কেমন চলছে? এইডস সম্বন্ধে এখানকার মানুষের ধারণাটা ঠিক কি? সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধকারিকরা কি বলছেন? সাধারণ মানুষদের বক্তব্য কি...সব ধরা পড়েছে আমাদের ক্যামেরায়।
তৃতীয় ভাগ-কর্মসংস্থান (সময়সীমা-৪১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড)
বেশিরভাগ সময়টাই নির্ভর করতে হয় জঙ্গলের কাঠের ওপরে। নিজেরাই স্বীকার করেন বাধ্য হয়ে চুরী করতে হয় তাঁদের। সংরক্ষিত বনভূমি হয়ে যাওয়ার পর অবস্থা আরও খারাপের দিকে। দীর্ঘদিন লোকগুলোর কাজ নেই। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প এখোনো অনেক গ্রামে পৌঁছোয়নি। ক্ষেতের ফসলে সারা বছর চলে না। যেটুকু ফসল হয় তাও যায় হাতির পেটে। আজ অনেকেই তাই ঘর ছাড়া গ্রাম ছাড়া। যাঁরা আছেন তাদের দুর্দশা ক্যামেরা বন্দী করলাম আমরা।
চতুর্থভাগ-পরিকাঠামো (সময়সীমা-৭৪ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড)
জঙ্গলের মধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত গ্রামগুলির রাস্তা-ঘাট, পানীয় জল, বাড়ি ঘরের পরিস্থিতি কেমন? এফ ডি এ ফান্ডের টাকায় গ্রামগুলিতে কেমন কাজ হয়েছে? না কি আদৌ হয় নি? আমরা এই বনবস্তি পরিক্রমায় সবচেয়ে দূরের যে গ্রামটায় যেতে পেরেছিলাম তার নাম আদমা। বক্সা বনাঞ্চলের অন্তর্গত। গাড়ি থেকে নেমে আরো চার-পাঁচ ঘন্টার হাঁটা পথ। ডুকপাদের গ্রাম আদমা। কেমন আছেন এখানকার মানুষরা? একসময় বনদপ্তর নিজেদের প্রয়োজনে যে বসতিগুলো স্থাপন করেছিলো আজ তাদের অবস্থা কেমন? ভোটাধিকার পাওয়ার পরেও কি তাঁরা তাঁদের দাবী-দাওয়া গুলো প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন?
এই চার পর্বের উত্তরবঙ্গের বনবস্তি কথা একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ তথ্যচিত্র। এই প্রথম উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বনবস্তি গুলির অবস্থা চিত্রায়িত হল। এই প্রথম রাভা, ডুকপা, নেপালী, ওরাঁও বিভিন্ন জনজাতির মানুষরা বললেন তাদের সমস্যার কথা একসাথে বনবস্তি কথাতে।
প্রযোজনা
রূপকলা কেন্দ্র
পরিকল্পনা ও রূপায়ণ
কল্লোল লাহিড়ী
পরিচালনা
রৌম্য রায়
কল্লোল লাহিড়ী
চিত্রগ্রহণ
অমিত মজুমদার
অতিরিক্ত চিত্রগ্রহণ
কল্লোল লাহিড়ী
সম্পাদনা
রুদ্র দাশগুপ্ত
বিশেষ সহায়তা
নেসপন
নেচার বিয়ন্ড
এই তথ্যচিত্র গুলি সপ্তম আন্তর্জাতিক সমাজ সংযোগ চলচ্চিত্র উতসব, ২০০৮, নন্দনে প্রদর্শিত হয়েছিলো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন