বরফ আইস্ক্রিমে গন্ধরাজ লেবুর সুবাস


আঠেরোশো তেত্তিরিশে কলকাতা বন্দরে একটি আমেরিকান জাহাজ এসে দাঁড়িয়েছিল। যার পেট ভর্তি ছিল বরফে। এক ইংরেজ সাংবাদিক খবর পেতেই ছুটেছিলেন সেই বরফ জাহাজ দেখতে। জাহাজের মার্কিন ক্যাপ্টেন সেই সাংবাদিককে যৌতুক হিসেবে দিয়েছিলেন এক টুকরো বরফের খন্ড। তাতেই তিনি আপ্লুত। আহ্লাদিত। আরও যা যা বিশেষণ যুক্ত করলে ভালো লাগে সেসবই। কলকাতার প্রচন্ড গরমে সাহেবরা তখন নাজেহাল। একমাত্র শিলা বৃষ্টি ছাড়া এই শহরে বরফ মেলা ভার। তাই একটু শিলা বৃষ্টি হলেই সাহেব, মেম, তাদের খানসামা সবাই নেমে পড়ে বাগানে আর বরফ কুড়োয়। একটু ব্র্যান্ডি দিয়ে খায়। কিছুটা তুলে রাখে বরফ জল খাওয়ার জন্য। আরও কত কি যে করে সেসব আদিখ্যেতা দেখলে বাড়ির দেশীয় ভৃত্যেরও বেশ লজ্জা করে বইকি। শীতের দেশের সাহেবদের গরম গরম বাতিক দেখে এদেশের লোক তাজ্জব বনে যায়। সাদা ময়দার মতো মুখ গুলো গরমে তেতে লাল। ঠিক চিড়িয়ানাখানার লালমুখো বানরগুলোর মতো। আর মেজাজ? থরহরি কম্প। পান থেকে চুন খসলেই আর রেহাই নেই। কাজেই তাদের ঠান্ডা রাখার জন্য মতলব খুঁজতে হয়। আর সাহেবরা ভাবে গরমের জন্য বুঝি নেটিভরা এমন অসভ্যের মতো লেংটি পড়ে থাকে। খালি গা। কোনো এটিকেটের বালাই নেই। শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হয় সব সময়। হাত দিয়ে খায়। ঢকঢক করে জল ঢালে গলায়। যেখানে সেখানে হাঁচে, কাশে। তারচেয়ে বড় কথা এমন আদুল গায়ে উদোম হয়ে থাকে কেউ? আর যাইহোক এমন অসভ্যের মতো এক টুকরো কাপড় পরে থাকা যায় না। তারা সবাই ভিক্টোরিয়ান সভ্যতায় দিক্ষিত বলে কথা! বংশ মর্যাদার, কৌলিন্যের একটা দাম আছে না।  

সে যাইহোক এক জাহাজ বোঝাই মার্কিন বরফ পেয়ে তো কলকাতা আহ্লাদিত হল। যখনকার কথা বলছি সেই সময়ে কিন্তু বেশ কয়েকটা কুঁদো বাঘ কালীঘাটের আসেপাশে ঘুরে বেড়াতো। সাহেবরা বন্দুক নিয়ে বার হতো বাঘ শিকারে। কলকাতার তখন তিলোত্তমা হতে ঢের দেরী।  এখন যেমন বাইপাসের ওপর দিয়ে, মা ব্রিজের ফ্লাই ওভার ধরে, মেট্রো রেলে গঙ্গার নীচ দিয়ে ধাঁ করে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় চলে যাওয়া যায় তখন তেমনটা ছিল না মোটেই। ইলেকট্রিসিটি নেই। ট্রাম নেই। বাস নেই। ঘোড়ার গাড়ি আর পালকি ভরসা। টিমটিমে সেই কলকাতায় হাঁসফাস করা গরমে এতো এতো বরফ রাখার জন্য লর্ড বেণ্টিক একটা বরফ ঘর তৈরী করলেন। সেই কবে যখন হিমঘরের কথা কেউ ভাবতেই পারতো না। সেখানে মার্কিন বরফের ঠাঁই হলো। কলকাতার নেটিভরা সেই প্রথম নাকি চাক্ষুস করলো এতো বরফ। রাজা, জমিদার, উমেদারদের কথা বাদ দিলাম। কারণ তাঁরা ছিলেন এগিয়ে। তাঁরা তো বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের আজব জিনিস দেখবেনই সবার আগে। সাধারণ মানুষের কাছে কিন্তু এই বরফ দেখা চাট্টিখানি কথা ছিল না। কাজেই কাগজে বেরিয়েছিল ফলাও করে। এমনকি প্রচন্ড আনন্দে এবং সাহেবদের অতি উৎসাহে লর্ড বেন্টিক সেই মার্কিন সাহেবকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন টাউন হলে। তারও দু বছর পরে ইংরেজ সাহবে কুল, তাদের কেরানীকুল, সূদূর ইংলন্ড থেকে আসা চাঁদপানা মুখগুলোর কষ্টের কথা ভেবে সরকারি ভাবে বরফ তৈরি শুরু হল প্রথম লক্ষ্ণৌতে। যদিও তার আগে হুগলীতে বরফ কল ছিল। কিন্তু সেটা তো প্রাইভেট। আর কে না জানে হুগলী নিয়ে একটু বেশিই এলার্জি ছিল ইংরেজদের। কাজেই লক্ষ্ণৌতে বরফ কল শুরু হতেই কলকাতার রাস্তায় শোনা গেল বরফ নেবে গো বরফ…মাত্র দু আনা সের। সাহেব পাড়া থেকে সেই ডাক ক্রমে আস্তে আস্তে বাঙালী পাড়ায় গেল। মধ্যবিত্ত বাঙালী বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়লো বরফ। সেই আনন্দ এবং প্রথম উত্তেজনা কেমন ছিল সেটা জানা যায়না। কিম্বা হয়তো আমি জানতে পারিনি। শ্রীপান্থ লিখে গেলে কি মজাটাই হতো তাই না? কিম্বা শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় যদি বরফ নিয়ে একটা আস্ত গল্প লিখতেন। কোনো এক গ্রীষ্মের ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে সেই গল্প পড়তে পড়তে কোথায় যে হারিয়ে যেতে কে জানে!

“বহু বছর পর ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড়িয়ে কর্ণেল অরিলিয়ানো বুয়েন্দিয়ার মনে পড়ে যাবে সেই সুদূর বিকেলের কথা যেদিন তাকে সঙ্গে নিয়ে বরফ আবিষ্কার করেছিল তার বাবা”। ‘নিঃসঙ্গতার একশো বছর’ এইভাবে শুরু করেছিলেন নোবেল সাহিত্যজয়ী ঔপন্যাসিক গার্ব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ। আস্তে আস্তে আমরা কেমন যেন জড়িয়ে গিয়েছিলাম মাকোন্দা গ্রামের সঙ্গে। বরফ স্মৃতি আমাদের এক অন্য আখ্যানে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এক পরত থেকে আরেক পরতে। সংস্কৃতির এক্কেবারে অন্দরে। এই পর্যন্ত লিখে মনে হলো এমনটা কেউ কি ভেবেছেন বরফ খাওয়ার আগের বাঙালি এবং বরফের পরের বাঙালি- এই দূটোর মধ্যে তফাত কি ঘটলো? অনেক কিছুই নিশ্চই। তার খাবারে পরিবর্তন এলো। ঠান্ডার কত রকম খাবার তৈরী করলো বাঙালি। সাহেবদের হেঁশেল থেকে সোজা আমাদের অন্দরে ঢুকলো। কি সুন্দর কাস্টারড বানাতো টুকুদি। আর ফ্রুট আইসক্রিম? ক্যারামেল? আর শুধু সাহেব কেন আমাদের ঘরের খাবার ঠান্ডার স্পর্শে এক নতুন রূপ কি ধরলো না? সেই মন কেমন করা রসগোল্লার পায়েস ফ্রিজ থেকে বেরিয়ে কেমন যেন এক আইসক্রিমের রূপ নিলো। রাবড়ি হয়ে উঠলো মোহময়ী। দই কেমন যেন হাতছানি দিয়ে ডাকলো সুদূরের স্বপ্নে। গরমের সময় তালশাঁস ফ্রিজে রেখে দেওয়ার পর সে যে অমৃত! আরও কত কত যে ওলোট পালোট হলো সেসব যদি খুঁজে বের করা যেত এক অন্য বাঙালির ছায়াচিত্র ধরা পড়তো নিশ্চই। লেনিন সেদিন হয়তো ধর্মতলার মোড়ে বরফ বৃষ্টিতে ভিজতেন।  

আমাদের উনুনের ঝুল-কালিতে ভর্তি আরশোলা টিকটিকি শোভিত সেই মজার রান্নাঘরেও কিন্তু বরফ এসেছিল। তার প্রয়োগ অবশ্য হয়েছিল অন্যভাবে। এক নিন্ম মধ্যবিত্ত বাঙালি সুলভ সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক পরিমন্ডলে। তার স্মৃতি বিস্মৃতি্র আখ্যানও অবশ্য অন্য রকমের।  

আমাদের কথার ভেতরেই যে কত রকম ভাবে বরফ কথাটা ঢুকে পড়েছিল তার হিসেব করাটা বেশ কঠিন ছিল। বাড়ির মধ্যে পাতকোর জল ছিল ‘বরফ শীতল’। মাটির কুজোর জল ছিল গন্ধরাজ লেবুর সুবাসে ভরা ‘বরফের মতো ঠান্ডা’। ভাত দিয়ে শাক মেখে খেতে হলে ছিল মণির তৈরী আমের কাসুন্দি। যা খেয়ে আমার কাকা বলতো দুপুরে ‘বরফ ঘুম’ পাবে। গরমের ছুটিতে মাথা ঠান্ডা রাখার উপায় ছিল জবাকুসুম তেল। ‘বরফ চাপিয়ে’ও এমন ঠান্ডা কেউ করতে পারবে না কোনো দিন। আর ছিল আমাদের অঞ্চলে একটা আশ্চর্য বরফের দোকান। যে দোকানটা ঘিরে একটা স্বপ্ন তৈরী হয়েছিল আমাদের সবার মনে। সে এক আশ্চর্য উড়ন্ত স্বপ্ন। আপনি অনায়াসে ‘বরফ স্বপ্ন’ও বলতে পারেন তাকে।

বাড়িতে বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজন আগে থেকে আসবে জানলে, কিম্বা দিদিদের শ্বশুর বাড়ির কুটুমরা গরমের দুপুর বেলা ভাত খেলে বাবার সঙ্গে আমরা সেই বরফের দোকানে ঢু মারতাম। ছোট্ট খুপরি মতোন দোকানটায় ছাদ পর্যন্ত রাখা থাকতো বরফের চাঁই। ধোঁওয়া বেরোতো সেই ঘর থেকে। উনুনের মতো গলগলে সেই ধোঁওয়া নয়। শীতের সকালের ছেঁড়া ছেঁড়া কুয়াশার মতো। সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব।

তখনও আমরা এয়ার কন্ডিশান মেশিন দেখিনি। ঠিক কেমন হয় জানি না। তারও অনেক পরে পিনাকি মামাকে হাওড়া স্টেশনে বোম্বের ট্রেনে তুলতে গিয়ে জানতে পারবো আসলেই একটা গোটা কামরা ঠান্ডা করে দেওয়া যায় মেশিন চালিয়ে। সেই কামরায় থাকে বড় বড় কাচের জানলা। ঠেলা দেওয়া দরজা। মুকুলকে নিয়ে প্যারাসাইকোলজিস্ট ডক্টর হাজরা আর বদমায়েশ লোকদুটো সোনার কেল্লা ছবিতে এমনই একটা কামরায় উঠেছিল। বরং ফেলুদা আর তোপসের কামরায় এসি ছিল না। জানলা খোলা ছিল। হাওয়া আসছিল হু হু করে। ব্রেকফাস্ট আসতে দেরী হওয়ায় ফেলুদা তোপসের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল মিষ্টির প্যাকেট। তোপসে কি নলেন গুড়ের সন্দেশ খাচ্ছিল? কি জানি! ফেলুদার বাড়িতে ফ্রিজ ছিল কিনা মনে করতে পারছি না। বরফ নিয়ে কোনো আদিখ্যেতা ছিল না তার। তবে বাঙালির দুর্বলতা ছিল। না হলে ঠান্ডা আনারস খেতে এতো ভালো লাগতো না। কিম্বা কেটে রাখা আম বরফ জমানো মুগ্ধতায়।

আমাদের বালী বাজারের বরফের দোকানে কোনো এসি ছিল না। কাঠের গুড়ো মাখা সেই বরফ গলতো আস্তে আস্তে। পাপ্পু কাশ্মীর থেকে বেরিয়ে এলে তার কাছে রাশি রাশি বরফের গল্প শুনেছিলাম। মাঠে, ময়দানে, বাড়ির কার্নিশে, পাহাড়ে ছেয়ে আছে বরফ। চলতে গেলে পা ঢুকে যাচ্ছে বরফে। আমি আর দাদা ওই বরফের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েই কাশ্মীর দেখতাম। বফফের চাঁই গুলোতে হাত দিলেই মনে হতো সাদা সাদা পাহাড়। বরফে ঢাকা রাস্তা। স্লাইড শোতে ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট ছবি দেখিয়েছিল একজন একবার পাড়ার ক্লাবে। সেই লোকটা নাকি উঠেছিল পাহাড়ের মাথায়। চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ। ফিসফিস করে হাবু জানতে চেয়েছিল এই বরফ কি খাওয়া যায়? চোখ কটমট করে তাকিয়েছিল পাপ্পু। কারণ সে কাশ্মীরে গিয়ে বরফ দেখেছিল শুধু। খায়নি। ওই বরফ খাওয়া যায় না। বালীবাজারের বরফের দোকানের বরফ খাওয়া যায়। খাওয়ার বরফ আর পড়ে থাকা বরফ আলাদা। খাওয়ার বরফ জমাতে হয়। আর পড়ে থাকা বরফ আসে আকাশ থেকে। বিজ্ঞের মতো বলেছিল পাপ্পু। তাহলে যে শিল পড়লে আমরা কুড়োই। কাপে করে চিনি মিশিয়ে খাই। তারবেলা? হাবু কথার পিঠে জানতে চাইলেও পাপ্পু কোনো উত্তর দিতে পারেনি। সত্যিই তো তাহলে কোন বরফ খাবো? আর কোন বরফ খাবো না? হাতে গুনে গুনে বাবাই বলেছিল পড়ে থাকা বরফ নোংরা। খাওয়া যায় না। ওটা পচা। রাস্তার আইস্ক্রিমওয়ালা ওই পচা বরফ দিয়ে আইসক্রিম বানায়। ওরা নর্দমার জল দেয়। আমাদের বাড়ির ফ্রিজের বরফ সবথেকে ভালো। সেটা দিয়েই ঠাম্মা সরবত বানায়। হাবু ঠোঁট উলটে বলেছিল ঘেঁচু। আসলেই বালী বাজারের দোকানের বরফ সব থেকে ভালো। কারণ ওটা সবাই খায়।

তখন আসলে সাম্যবাদ আর লোড শেডিং এর যুগ। সবাই যা করে। সবাই যা বলে। সবাই মিটিং এ মিছিলে হেঁটে যে হক আদায় করে নেয় সেটাই আমাদের। খামোকা তুমি একক একমেবাদ্বিতিয়ম হতে যাবে কোন দুঃখে বাবা? বরফকে বুর্জোয়া বানানো চলছে না…চলবে না।

বাবাই কথা বাড়ায়নি। ওর বাড়িতে নতুন ফ্রিজ এসেছে। পাড়ার মধ্যে প্রথম। সবাই তাই ভিড় করে দেখতে গেছে। ইয়া বড় একটা আলমারির মতো দেখতে। দরজা খুললে কুয়াশা কুয়াশা ধোঁওয়া বেরোয়। ঠিক বালী বাজারের বরফের দোকানের মতো। তবে যেটা দোকানের মতো নয় তা হল চাঁই চাঁই বরফ এখানে থাকে না। ছোট ছোট সব স্টিলের ট্রে। বাটিতেও জমানো যায়। দোকানের বরফের মতো ওজন করে কিনে নিয়ে এসে তাকে ভালো করে ধুয়ে নোড়া দিয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো করার আর দরকার হয় না। জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলেই হলো। কোনো ঝামেলার তো কিছুই নেই। শুধু কারেন্ট অফ হলেই একটু যা সমস্যা। তাতে আর কি আসে যায়। এরপর এমনটা হল সবার একটু বরফ দরকার হলে, একটু ঠান্ডা জল খেতে হলে, বাবাইয়ের ঠাকুমা পায়েস রান্না করলে গোটা পাড়ার অনেকেই যেত। মাঝে মাঝে ফ্রিজের শরীর স্বাস্থ্য কেমন আছে জানতেও লোকের অভাব হতো না। আসতে আসতে চারপাশটা পাল্টালো। পাড়ার বড় বড় পুকুর বোঁজানো হল। গাছ কাটা পড়লো। নতুন নতুন বাড়ি হলো। মানুষ বাড়লো। সময় এগোলো। ছাদে টিভির এ্যান্টেনার মতো ফ্রিজের সংখ্যাও বাড়তে থাকলো পাড়ায়। কাজেই বরফের দোকানে গিয়ে আর বরফ কিনতে হলো না। কেউ অন্যের বাড়ির ফ্রিজে জিনিসপত্রও রাখলো না। জানতেও চাইলো না পড়শির ফ্রিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে।

তারও অনেক বছর পর যখন নিজেদের বাড়িতে প্রথম ফ্রিজ এলো তখন বাবা নেই। গরমকালে বরফ কিনতে যাওয়া ব্যাগটাও কোথায় হারিয়ে গেছে। দাদার প্রথম চাকরীর মাইনেতে কেনা লাল টুকটুকে ফ্রিজে কবেকার মণির রেসিপিতে আমরা আইস্ক্রিম বানিয়েছিলাম। সাদা ঝুরঝুরে বরফের। জলের মধ্যে চিনি আর গন্ধরাজ লেবুর সুবাস দিয়ে। সেই বরফ আইসক্রিম গরমের দুপুরে খেতে যে কি আরাম। আর তার মধ্যে যদি চৌসা আমের রস দিয়ে দেওয়া যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। দিব্যি কেটে বলছি আমার সেই কবেকার এ্যালবামে মলিন হয়ে যাওয়া কাকার মতো এক অনন্য সাধারণ বরফ ঘুম পাবেই পাবে। যা গরম কালে ছুটির দুপুরে মাস্ট।

খেয়েছেন নাকি কোনোদিন এমন বরফ আইস্ক্রিম? একবার বাড়িতে ট্রাই করে দেখতে পারেন। আশা করি মন্দ লাগবে না। ঠিক তখনই হয়তো আপনার চারপাশেও ঝরে পড়তে পারে এমন অনেক বরফ স্মৃতি আর গন্ধরাজ লেবুর সুবাস।

হ্যাংলা, গ্রীষ্ম সংখ্যা, ২০২৪ প্রকাশিত।

ছবি সৌজন্য, গুগুল ইমেজ।

মন্তব্যসমূহ

  1. আমরা বরফ ঘুম থেকে জেগে উঠে স্মৃতির সরণী ধরে হাঁটলাম ।চোখে মুখে ঝরে পড়ছে আমাদের ছোট বেলার কককত

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় লেখা গুলি