Three Of Us


 তারকভস্কি বলেছিলেন সময়ের ভাষ্কর্য। ঋত্বিক বলেছিলেন বক্তব্যের হাতিয়ার। গদার বলেছিলেন চব্বিশটা ফ্রেমে মিথ্যের দুনিয়া। ১৮৯৫ সালে ডিসেম্বর মাসেই তো সাদা পর্দা কালো হয়েছিল। নাকি ধূসর? গোর্কি লিখেছিলেন তাঁর প্রথম ছবি দেখার অভিজ্ঞতা। ঠিক বরফের মতোই বিষণ্ণ। ছায়া মেদুর। অতীত ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে মুহূর্ত। আজ যা বর্তমান কাল তাইতো অতীত। ছবির অন্দরের রাজনীতিও কি ঠিক তাই? এই নিয়ে কত মানুষ যে কত কথা বলেছেন তা একটু আধটু নয় বেশ অনেকটা চলচ্চিত্রের ইতিহাস খুঁড়লে তা টের পাওয়া যায়। অনেকে সেটা চান আবার অনেকে না। শুধু ছবিতে গল্প দেখেই অনেকে সন্তুষ্ট থাকতে চান। আর সেই গল্প কত রকম ভাবেই না বলে চলে এই জগৎ।

আমিও সেই গল্প দেখার অছিলায় জোরো গা নিয়ে বছরের প্রায় শেষের সে দিনের গুন্তিতে আঁতিপাঁতি করে খুজছিলাম ছবি। এই ওটিটি, সেই ওটিটি, তমুক লিঙ্ক, হারিয়ে যাওয়া হার্ড ডিস্ক, ভেঙে যাওয়া ল্যাপটপ- না কিছুতেই কিছু পাচ্ছিলাম না। অবশেষে অবিনাশ অরুণ আমাকে থমকে দিলেন। হিন্দি ছবির ইংরাজী নামকরণে থ্রি অফ আস কোনো নতুন চমক দেয় না। কিন্তু ট্রেলার দেখে আর অপেক্ষা করে থাকতে পারি না। মনে হয় যা মনে পড়ছে না। যা মনে পড়লে ভালো হতো। যে দৃশ্যায়ণ ভুলে গেছে এই ভূ-ভারত তেমন একটা রাজত্বে প্রবেশ করতে চলেছি। প্রায় একশো মিনিটের একটা ছবিতে কোঙ্কনের এক গ্রামে কাটিয়ে মনে হল আমিও তো শৈলজা দেশাইয়ের মতো ফিরে যেতে পারি কোনো এক আঠাশ বছর আগের এক জায়গায়। ছোট্টবেলার কোনো এক স্মৃতির শহরে। মুশকিলটা হলো সব ভুলতে বসা শৈলজার ফিরে যাওয়ার শৈশবের জায়গাটুকু আছে আমার কাছে আজ সেটারও যে কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই।
গল্প বলতে চাই না। মনে করাতে চাই শেফালী শাহ নামের এক প্রিয় অভিনেত্রীকে। মনে করাতে চাই অবিনাশ অরুণের প্রথম ছবি কেল্লাকে। মনে করাতে চাই জয়দীপ আলহওয়াটকে। আর একটা চিত্রভাষাকে যা আমরা বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছি জগঝম্পের সার্কাসের মাঝে।
একটা বছর সত্যিই কি শেষ হচ্ছে? মাঝে মাঝে মনে হয় এই গুন্তিরই বা কি দরকার ছিল? নাকি এটাও একটা বড় আখ্যানের অংশ?
ছবিটা দেখতে পাবেন নেটফ্লিক্সে।
নতুন বছর আপনাদের ভালো হোক। শান্তিতে কাটুক।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা গুলি