উত্তরসূরী

 

একটা আন্দোলন অনেক কিছু শেখায়। আমি চোখ বন্ধ করে থাকতেই পারি। তাতে সেই জনজোয়ারের কোন ক্ষতি হয় না। যতটা ক্ষতি হয় নিজের। কোন একক ব্যক্তি সেই প্রতিরোধের সাথে মিশলে স্ফুলিঙ্গ বাড়ে। একক থেকে খন্ডিত হয়ে সেই ব্যক্তি তখন সমষ্টি হয়ে যান। আর কে না জানে সেই সমষ্টি অনেক কিছু শেখায়। যে প্রতিবেদনটা দেখে সকালের ঘুম চোখে ভালোবাসা জাগে। মনে হয় আরও দু দন্ড বেঁচে গেলে নিশ্চই কিছু আশানুরূপ দেখে যেতে পারবো। সেটা প্রত্যেক দিন কিছু না কিছু এন ডি টিভি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত পোষ্ট দেখিয়েই যাচ্ছে। বাবারা শুধু প্রতিরোধের রাস্তায় নামেননি। এনেছেন তাদের সন্তানদের। তারা রাস্তায় নেমে যেমন কাজ করছে তেমনি অন লাইনের ক্লাস করছে। কেউ সেভেনে পড়ে। কেউ এইটে। কেউ এবার মাধ্যমিক দেবে। কেন এনেছেন তাঁরা তাঁদের উত্তরসূরিদের? না হলে চিনতে পারবে না সে পথকে। নিজেদের ঐতিহ্যকে। কোন এক জাতি কিভাবে নিজেদের তৈরী করবে তার শিরদাঁড়া তৈরী হয় তাদের নিজস্ব কৃষ্টিতে। ঐতিহ্যে। সংস্কৃতির আঙিনায়। দেশ ভাগের পর থেকে এই জাতিকেও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বইতে হয়েছে। টেররিস্ট বলেছে এক সময় তার দেশ। এখনও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এন সি আর ইত্যাদি নিয়ে। নোংরা নোংরা জোকস, কুৎসিত বদনাম কি জোটেনি তাদের কপালে। সব চেয়ে বোকা জাত হিসেবে ভারতবর্ষ এক সময় তাদের চিহ্নিত করেছে। আজ যখন অন্দরে ঝাঁকি দেওয়ার দরকার হয়ে পড়ছে তখন বোঝা যাচ্ছে কতটা গর্দভ ছিলাম আমরা। ইতিহাস সব সময় ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে শাসক দল। একনায়কতন্ত্র সব সময় বলবে রাজনীতি করতে এসো না ওটা খারাপ। রাজনীতি আসলে আমরা করবো। যেসব মানুষ এখনও বিশ্বাস করেন "আমি রাজনীতি করিনা।" তাঁরা এক ভ্রান্ত ধারনার শিকার। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজের এক অঙ্গ। তার জন্য চর্চা করতে হয়। তারজন্য পরিশ্রম লাগে। পড়াশুনো লাগে। উত্তরসূরী যাতে প্রশ্ন করতে শেখে। ভুলে না যায় তাদের বাপ দাদা দাদিদের কর্মকান্ড তারজন্য এই শীতেও ঘেঁটি ধরে তাদের নিয়ে আসে রাস্তায়। সেই রাস্তায় আমার উত্তরকালের ভারতবর্ষ তৈরী হয়। যে ভারতবর্ষ আবার প্রশ্ন করবে। দরকার হলে প্রতিরোধ। বিকিয়ে যাওয়া, ঘুন ধরা ব্যবস্থাকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দেবে। শিশির বিন্দুর মতো সেই মুখ গুলোই এখন একমাত্র আশার আলো। আর কিছু নয়।

উত্তরসূরী 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা গুলি