লুডো
জীবনটাকে কেমন দেখছেন?
ক্যালাইডোস্কোপের মতো...অনেক রঙীন কাঁচ। ফুল...ফুল...প্রজাপতি...
জীবনটাকে কেমন দেখছেন?
সি সি টিভি ক্যামেরার স্ক্রিনের মতো...
কেমন দেখছেন জীবনকে?
লুডোর মতো...।
লাইফ ইন আ মেট্রো(২০০৭) মনে আছে আমার। অনেক গুলো চরিত্র তারা এই শহরের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। একে অপরকে অতিক্রম করে। ছায়ার পাশে এসে দাঁড়ায়। কখনও মুখোমুখি হয়। আবার কখনও বা হয় না। কিন্তু তারা প্রত্যেকেই থাকে। শহরের জেব্রা ক্রসিং এর মতো তাদের জীবন। উপরিতল যেন। ভেতরে হানা দিলে পাওয়া যায় পাহাড়...সমুদ্র...নদী উপত্যকা...বন্দর...হাসি আনন্দ কান্নার চোরাবালির স্রোত। আর এই ফরম্যাটে লুডোর ডিজিটাল স্ক্রিন সাজিয়ে বসেন পরিচালক লেখক অনুরাগ বসু। বারবার তাকে ঈর্ষা হয়। কেমন করে হিন্দি ছবির জনপ্রিয় মূল ধারায় গল্প বলতে বসে অনেক গুলো নিয়ম রীতিকে বুড়ো আঙুল দেখান তিনি। অনায়াসে জারিয়ে দেন প্রান্তিক উপছায়ার মতো ঘুরে বেড়ানো প্লট গুলোকে। সব সময় সেগুলো যে প্রচন্ড ভাবে কাজে দেয়, সাকসেসফুল হয় তেমনটা নয়। কিন্তু ছবির মূল চরিত্র গুলোর সাথে তেঁতুলের আচারের মতো জড়িয়ে থাকে। পর্দার ওপর যে মায়াবী রূপকথার একটা শহরকে নামিয়ে আনেন সেই শহর তো আমাদের খুব দূরে নয়। কিন্তু নাগালের বাইরে। তাই একজন চোর... একজন ব্যার্থ প্রেমিক... রেস্টুরেন্টের মালিক... স্ট্যাণ্ড আপ কমেডির এ্যাঙ্কর...একটা থানার ওসি...নিদেন পক্ষে আন্ডারওয়ার্ল্ডের গ্যাঙ...জেল খাটা বাবা...চারপাশের দেখা চরিত্র গুলো যেন বড় শহরে সবাই কেমন যেন হারিয়ে যায়। আর ঠিক তখনি একটা এ্যাবসার্ড ছকের মধ্যে প্রচন্ড সাহসের সাথে একজন এখনকার শক্তিশালী পরিচালক দম বন্ধ করা এক একটা হাসির গোলা ফাটাতে থাকেন। আর কখন যে তা চোখের জল হয়ে গাল বেয়ে নেমে আসে বুঝতেও পারি না। আপনার ক্যামেরা লেখনী আরও শক্তিশালী হোক অনু্রাগ। অনন্ত ভালোবাসা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন