ভুলে না যাই
রবীন্দ্রনাথ তাঁর ছেলে রথীন্দ্রনাথকে পাঠিয়েছিলেন ইলিনয়ের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। তাঁর মনে হয়েছিল আমাদের চিরাচরিত কৃষি ব্যবস্থার সাথে যদি মিশে যায় আধুনিক কৃষি উন্নতির দিশা। ভারত কৃষি প্রধান দেশ। এই বাংলা তার সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলার গরিমায় উদ্ভাসিত। তাকে যদি আরও একটু যত্ন নেওয়া যায়, পরিচর্যা করা যায়, তাহলে প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা। রথী তাঁর পিতৃ স্মৃতিতে লিখেছেন বাবার কৃষি নিয়ে, কৃষকদের নিয়ে সুচিন্তিত পরিকল্পনার কথা। লিখেছেন কিভাবে নোবেল পুরষ্কারের টাকা দিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন গ্রামীন ব্যাঙ্ক। হ্যাঁ সেই যুগে। সেই প্রথম। যাতে কৃষকরা আর মহাজনের ঋণের ফাঁদে না পড়েন। চিরকাল দাসত্ত্ব করতে না হয়। তাঁর এই সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনার পেছনে যাঁরা নিরন্তর চিন্তার স্পর্শ যুগিয়েছেন তাঁদের একজন হলেন আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু। রথী কি সুন্দর করে লিখেছেন তাঁর কথা। লিখেছেন কৃষি বিদ্যা নিয়ে পড়তে যাওয়ার পেছনে এই মানুষটির উৎসাহের কথা। একটা সময়ে ছুটেও গিয়েছিলেন তিনি রথীর কাছে। কারণ তখন তো তিনি ব্যাকুল হয়ে আছেন উদ্ভিদের অস্তিত্ত্বের প্রমানে। আজ আচার্যের জন্মদিন। খুব প্রাসঙ্গিক আমাদের কাছে এই জন্য যে ভারতের কৃষি ব্যবস্থা এই মুহূর্তে সঙ্কটের মুখে। আজ আমাদের কৃষকরা রাস্তায়। প্রতিবাদে। যে ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হতে একসময় একদল মানুষ চিন্তা করছিলেন সেই ব্যবস্থাই পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে তাদের গলায় ফাঁস পরাতে চাইছে। তখন দেশটা ছিল পরাধীন। আজ দেশটা স্বাধীন। তখন ইংরেজের সেনা সামন্ত ছিল আজ দেশের নিজের ক্ষমতার চোখ রাঙানি আছে। যে সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ আজ রাস্তায় তাঁদের আজ এক পূণ্যের দিন। গুরুনানক জন্মজয়ন্তী তাঁরা আজ রাস্তায় পালন করবেন। আর আমরা বাঙালীরা? আরও একবার মনে করবো কী জগদীশ্চন্দ্র বসুকে? রবীন্দ্রনাথকে? ফিরে দেখবো কি কৃষি ব্যবস্থাকে? নাকি চুপ করে থাকাটাই শ্রেয় বলে মেনে নেবো?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন