তেপান্তর



আমাকে আর দাদাকে শোনানো হতো মধ্যরাতের সেই গল্প...।
তিন মহিলার সীমানা পেরোনোর দুঃসাহসিক অভিযান...।
আমাকে আর দাদাকে বসিয়ে দেওয়া হতো এক না দেখা না জানা সময়ের মধ্যিখানে।
চোখের ওপর বোলানো হতো সেই আ
শ্চর্য রঙের তুলি...
মাড়াই ভরা ধান...গোয়াল ভরা গাই...ফলসা গাছের তলায় মেঘ ঘনিয়ে আসার সিনারি...।
দাদা আঁকতো মন দিয়ে...প্যাস্টেল কালার ঘষে ঘষে...।
ছবি দেখে বাবা হাসতেন...মা যত্ন করে রেখে দিতেন পুরোনো কাগজের মাঝখানে...।
নরম হয়ে আসা আলোয় লক্ষ্মীর ঝাঁপিতে ঠাম্মা খুঁজতেন দেশের মাটি...।
বালীর বাসায়...নোনা ধরা দেওয়ালে চলতো এগারোটা মানুষের দিন যাপনের চিত্র...।
কোনো এক মাঘের শীতে...লোড শেডিং এর রাতে...হ্যারিকেনের আলোয়...বাবা খুলে বসতেন এক চটি বই...।
তাঁর ক্ষয় রোগ ধরা শরীরের গভীরতা থেকে দৃপ্ত ভঙ্গিতে পড়তেন...উচ্চারণ করতেন...
"বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে..."
ঠাম্মার খাওয়া থেমে যেত...পিসি রান্নাঘরের লম্ফ নিভিয়ে এক চিলতে উঠোনে এসে বসতো...
নিঝুম হয়ে থাকতো মানুষ গুলো...।
জোছনার আলোকিত ভুবনে আমি দেখতাম...তাদের চোখে করুণাধারা...।
আমি জানতাম...ঠিক জানতাম...ওখানেই কোথাও লুকিয়ে আছে আমার
তেপান্তর...।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় লেখা গুলি