সে বড় ভালোবাসার সময়
‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ রিলিজ
করেছিল কোন এক সিপিয়া টোনের এপ্রিল মাসের ভ্যাপসা গরমে। আমির খান আর জুহি চাওলার
জন্য সবাই যখন কেঁদে কেটে, ঘেমে নেয়ে শ্রীকৃষ্ণ সিনেমা হল
থেকে বেরিয়ে আসছি ঠিক সেই সময়ে আমার এক বন্ধুর ইচ্ছে হয়েছিল পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু
সে কোথায় পালাবে আর কাকে নিয়ে পালাবে সেই কথা চিন্তা করতে করতে বর্ষা এসে গিয়েছিল।
তাদের কাকেশ্বর তলার গঙ্গার জল বাড়ির উঠোন বুড়ি ছোঁওয়া করেছিল। সেই ভরা ভাদরে তার
আর পালিয়ে যাওয়া হয়নি। বাড়ির চিলেকোঠা থেকে উঠতি গোঁফের যে প্রেম কাব্য শুরু হয়েছিল তা পরিণত রূপ পেল ঠিক তার পরের বছরের শীতে। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়াতে’ সলমন খান পায়রা ওড়ালো। আর ভাগ্যশ্রী তা ধরলো খপ করে।
সে কি চাঞ্চল্য
আমাদের মধ্যে। হাতিবাগানে যে পায়রা পাওয়া যায়। এবং তাদের পোষ মানালে যে চিঠি আদান প্রদান
করা যায় আমাদের কেউ কেউ তা বিশ্বাস করে নিল। বাড়িতে পায়রা এলো। পোষ মানানোর জন্য
তাদের ট্রেনিং দেওয়া শুরু হলো। উড়ে পাশের বাড়ির মোনালিসাদের বাড়ির বারান্দায় যাতে
গিয়ে বসে তার জন্য বাঁশের কঞ্চির মাথায় তীর চিহ্ন আঁকা হল। পায়রা নাকি এইসব
সাঙ্কেতিক ভাষা বোঝে! পায়রা দানা খেল। পায়রা উড়লো। কিন্তু মোনালিসাদের বারান্দায়
বসলো না। ভারী রাগ হলো পল্টুর। তবুও ইনভেস্টমেন্ট তো কম হয়নি। তাই পায়রার পায়ে
চিঠি বাঁধা হলো। পায়রা উড়লো। সবার নিঃশ্বাস বন্ধ। এই বুঝি মোনালিসা বারন্দায় এসে
পায়রাকে খপ করে ধরে। কিন্তু ক্লাইমেক্সের পর্দা আরও চড়িয়ে পায়রা বসলো মোনালিসার
বাবার সদ্য কেচে দেওয়া লুঙ্গির ওপর। আর কোথায় যায়। খপ করে দুটো লোমশ হাত পায়রাটাকে
ধরলো। চিঠি খানাকে পড়লো। তারপর যা হয়েছিল তা সেই সময়কার নাগরিক কমিটি জানে। আর জানে
কাকেশ্বর তলা...পালপাড়া...রাসবাড়ির গঙ্গার ঘাট। জানে বকুল আর চাঁপা গাছটা। জানতো
খানিকটা তালবুড়িও। না তখন ফেসবুক ছিল না...ব্ল্যাক ফরেস্ট ছিল না...আর্চিজ ছিল না
এমনকি১৪ ফেব্রুয়ারীও না। প্রত্যেকটা দিন ছিল ভালোবাসার দিন। আর ক্যালানি খাওয়ারও।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন